Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প

টিউলিপসহ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:৫৩

টিউলিপসহ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

২০১৩ সালে ক্রেমলিন সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে টিউলিপ সিদ্দিক

বাংলাদেশের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৫৯ হাজার কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে নাম এসেছে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিকেরও। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন এই তদন্ত করছে।

টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য, তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া।

এখন টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি ২০১৩ সালে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন, যেখানে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছিল।

মূলত টিউলিপ সিদ্দিকের খালা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন যে ব্যাপক তদন্ত শুরু করেছে, তারই আওতায় পড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তবে তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে, এগুলো ‘মিথ্যা অভিযোগ’।

অভিযোগগুলোকে ‘পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করে সূত্রটি আরও বলেছে, এগুলো টিউলিপের খালার ক্ষতি করার জন্য সাজানো হয়েছে।

ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টিউলিপের ওপর প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের আস্থা আছে এবং দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপগুলোর দেখাশুনো করার ক্ষেত্রে তার দায়িত্ব অব্যাহত থাকবে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্রের তথ্য অনুযায়ী, টিউলিপ আত্মসাতে জড়িত থাকার যে অভিযোগ, সে সবে তার ‘কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নাকচ করেছেন।’

বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থেকে তিনি বিরত ছিলেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখপাত্র।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা-বিরোধী একজন রাজনীতিবিদ ববি হাজ্জাজের করা অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তটি চলছে। অনুসন্ধানের জন্য এখনো টিউলিপের সঙ্গে কমিশনের যোগাযোগ হয়নি।

দুদক শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানাসহ তাদের পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য এবং আওয়ামী লীগ সরকারের জ্যেষ্ঠ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।

বাংলাদেশে মোট ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাকে স্বৈরশাসক হিসেবে দেখা হয়, যার সরকার কঠোরভাবে ভিন্নমত দমন করত। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়ার পর থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের অভিযোগ তুলছে।

জুলাই-অগাস্টে আন্দোলন চলাকালে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে’ জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। শত শত আন্দোলনকারী নিহত হয় ওই আন্দোলনে।

সাবেক সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-সহ আরও ৪৫ জনের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। যাদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

এদিকে, আওয়ামী লীগের ব্রিটেন শাখার নেতা সৈয়দ ফারুক বলেছেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৫ সালে উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেইট আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন, যে আসনটি প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের আসন হবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাসের লাগোয়া।

আদালতে দাখিল করা নথিপত্রের বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ববি হাজ্জাজ অভিযোগ করেছেন ১০ বিলিয়ন পাউন্ডের রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প নিয়ে রাশিয়ার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের বৈঠকের মধ্যস্থতা ও সমন্বয় করেছিলেন টিউলিপ।

নথিপত্রের বরাত দিয়ে অভিযোগে দাবি করা হয়, এসব আলোচনার ফলে প্রকল্পের ব্যয় অন্তত ১ বিলিয়ন পাউন্ড বাড়ানো হয় যার ৩০ শতাংশ টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। বিভিন্ন ব্যাংক ও বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে এই টাকা পৌঁছানো হয় তাদের কাছে।

ববি হাজ্জাজের অভিযোগ অনুযায়ী, এই প্রকল্প থেকে ৩.৯ বিলিয়ন (৩৯০ কোটি ) পাউন্ড সরিয়ে নেয় শেখ হাসিনার পরিবার ও তার মন্ত্রীরা। 

Logo

অনুসরণ করুন