Logo
Logo
×

প্রযুক্তি

দেরিতে জন্মনিবন্ধন করবেন যেভাবে

Icon

আইটি ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৫, ২৩:৪৪

দেরিতে জন্মনিবন্ধন করবেন যেভাবে

শামীম তার প্রথম সন্তান আলিফের জন্মনিবন্ধনের জন্য গিয়েছিলেন ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে। সেখানকার ডিজিটাল সেন্টারের অপারেটর শরীফ যখন আলিফের জন্মনিবন্ধনের ফরম পূরণ করছিলেন তখন শামীম তার নিজের জন্ম নিবন্ধনের জন্য চিন্তা করতে লাগলেন। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেও জন্ম নিবন্ধন করা হয়নি কখনো। 

শামীম তাঁর নিজের জন্মনিবন্ধনের বিষয়ে জানতে চাইলে অপারেটর শরীফ জানালো জাতীয় পরিচয়পত্র যদি থাকে তবে এই কাগজগুলো প্রয়োজন:

  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)

  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি (১ কপি)

  • মোবাইল নম্বর

  • যদি ঠিকানার প্রমাণপত্র চাওয়া হয়, তাহলে ইউটিলিটি বিল বা চেয়ারম্যানের প্রত্যয়ন

জন্ম সনদ নেই এবং জাতীয় পরিচয়পত্রও নেই—এমন ক্ষেত্রে প্রয়োজন:

  • স্কুলের সনদ বা টিকা কার্ড (যদি থাকে)

  • পিতা-মাতার NID

  • জন্মতারিখ ও ঠিকানা নিশ্চিত করতে দুই জন সাক্ষীর হলফনামা (সাধারণত স্থানীয় চেয়ারম্যান/মেম্বার বা গেজেটেড কর্মকর্তার সত্যায়নসহ)


শামীমের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। তিনি নিজের জন্ম নিবন্ধন নিজেই করবেন বলে সিন্ধান্ত নিলেন। বাসায় ফিরে অপারেটর শরীফের পরামর্শ অনুযায়ী https://bdris.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করলেন শামীম।

  • শামীম প্রথমে ওয়েবসাইটে গিয়ে মোবাইল নম্বর দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুললেন।

  • তিনি প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন নাম, জন্মতারিখ, জন্মস্থান, পিতা-মাতার নাম, এবং ঠিকানা বাংলা ও ইংরেজিতে পূর্ণ করলেন।

  • জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, হাসপাতালের ছাড়পত্র এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করলেন।

  • সব তথ্য সঠিকভাবে পূর্ণ করার পর ‘Submit’ বাটনে ক্লিক করে আবেদন জমা দিলেন।

  • আবেদন জমা দেওয়ার পর, তিনি ই-পেমেন্ট অপশনে যান এবং বিকাশ, নগদ, উপায় অথবা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করেন।

  • ফি পরিশোধের পর একটি চালান ফরম প্রস্তুত হয়ে যায়, যা শামীম ডাউনলোড বা প্রিন্ট করে রেখেছিলেন।

এরপর শামীম ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম সনদপত্র সংগ্রহ করলেন। শামীমের প্রকৃত জন্ম সাল ১৯৮১। তবে সার্টিফিকেটে তার জন্মসাল ১৯৮৩। শামীমের মনে পড়ল ১৯৯৫ সালে স্কুলে নিবন্ধনের সময় গড়ে সব ছাত্রের বয়স দুই কমিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর সময়ের অধিকাংশ মানুষের প্রকৃত জন্মসাল আর সার্টিফিকেটের জন্মসাল আলাদা। একবার ভেবেছিলেন প্রকৃত জন্মসাল দিয়েই জন্ম নিবন্ধন করবেন। কিন্তু পরে ভেবে দেখলেন সার্টিফিকেটের সঙ্গে না মিললে পরে ঝামেলা হবে। তাই সার্টিফিকেটের জন্মসাল দিয়েই জন্ম নিবন্ধন করলেন এবং ভাবলেন, তাঁর ছেলে আলিফের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা হবে না। দুটো জন্মতারিখ থাকাটা বিদেশিদের কাছে কোনো ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করে না। তা ছাড়া যেহেতু সরকার নাগরিকের ডেটাবেইস তৈরির প্রতি যেহেতু আন্তরিক। প্রতিটি নাগরিকেরই উচিত সরকার ও নিজের জন্য সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করা।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে ১০০-রও বেশি সরকারি সেবা নিয়ে চালু হচ্ছে ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন আউটলেট। চলমান ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলোকেও এতে যুক্ত করা হবে। সেখানেও পাওয়া যাবে উল্লিখিত সেবাটি। 

এই উদ্যোগ শুধু সরকারি সেবা গ্রহণ সহজ করবে না, একই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের জন্য কর্মসংস্থান ও লাভজনক সামাজিক ব্যবসার সুযোগও সৃষ্টি করবে।


Logo

অনুসরণ করুন