ঢাকার ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি গুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে 'ধ্বংসলীলা' বলে উল্লেখ করেছে ভারতের পত্রিকা আনন্দবাজার। একই সঙ্গে তারা বলেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে আবার আগস্টের দৃশ্য ফিরে এসেছে বাংলাদেশে। শিরোনা করেছে- ''অগস্টের ‘ছবি’ ফিরল ফেব্রুয়ারির বাংলাদেশে! রোষের নিশানায় মুজিব, হাসিনা, আওয়ামী নেতৃত্ব।''
আরেকটি শিরোনাম করেছে, 'মুজিবের বাড়ি ভেঙে ইট, কাঠ, লোহাও নিয়ে যাচ্ছেন মানুষ! লোপাট অনেক বই, ধানমন্ডিতে ধ্বংসলীলা।’
বুধবার রাত থেকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালেও তা চলছে। অনেকে সেই বাড়ি থেকে ইট-কাঠ-লোহা নিয়ে যাচ্ছেন। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বইপত্র। যাঁরা এগুলি নিচ্ছেন, তাঁরা অধিকাংশই নিম্নবিত্ত সাধারণ মানুষ। মূলত লোহা, কাঠ বিক্রি করে কিছু অর্থ উপার্জনই তাঁদের লক্ষ্য।
বুধবার রাত থেকে ধানমন্ডিতে অশান্তি শুরু হয়। মুজিবের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান বহু মানুষ। বাড়িতে ঢুকে তাঁরা ভাঙচুর শুরু করেন। এমনকি, বাড়ির একাংশে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। তার পর সারা রাত বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলেছে। বৃহস্পতিবার সকালেও ভাঙা হচ্ছে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি। অনেক মূল্যবান এবং দুষ্প্রাপ্য বই ওই জাদুঘরে ছিল। সে সব তুলে নিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। কেউ হাতে করে কয়েকটি বই নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ রিকশা ডেকে বইয়ের বড় বড় কার্টন নিয়ে যাচ্ছেন। মুজিবের স্মৃতিবিজড়িত বই ছাড়াও ওই পরিবারের সদস্যদের লেখা বইও জাদুঘরে ছিল।
বাংলাদেশবাসীর উদ্দেশে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বুধবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন বলে আগে থেকে ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগ। তা নিয়ে হাসিনা-বিরোধীদের ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছিল। রাতে ভাষণ শুরুর আগেই সেই রোষ গিয়ে পড়ে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে। সমাজমাধ্যমে ডাক দেওয়া হয়, ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির। এর পর মুজিবের বাড়িতে তাণ্ডব, ভাঙচুর চালায় জনতা। পরে সেখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
আনন্দবাজার লিখেছে- 'বুলডোজ়ার, ক্রেন এনে ৩২ নম্বর ধানমন্ডি গুঁড়িয়ে দিয়েও রোষ মেটেনি বাংলাদেশের বিক্ষোভকারীদের। বুধবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়ে গিয়েছে উন্মত্ত জনতার হামলা। নিশানায় জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর কন্যা হাসিনা-সহ আওয়ামী লীগের নেতারা। ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি চলছে দেদার লুটপাটও!'