কসাইটুলীর ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আজ সকালে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭ এবং এর কেন্দ্রস্থল নরসিংদী মাধবদী, ঢাকা থেকে যার দূরত্ব মাত্র ১৩ কিলোমিটার।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ থেকে ১০টা ৩৯ মিনিটে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পে ঢাকার বংশালের কসাইটুলির কেপি ঘোষ স্ট্রিটের ২০/সি নম্বর ভবনের রেলিং ভেঙে নিচে পড়ে তিনজন পথচারী নিহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ভূমিকম্পের সময় হঠাৎ করে ছয়তলা ভবনের রেলিং ধসে পড়ে তিন পথচারী ঘটনাস্থলে নিহত হন। ভবটির নিচে একটি গরুর মাংস বিক্রির দোকান ছিল। সেখানে থাকা ক্রেতা ও পথচারীরা আহত হন। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হন।
ঘটনার পরপরই তাদের স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিটফোর্ড হাসপাতাল) নেওয়ার পর চিকিৎসকরা ওই ৩ জনকে মৃত ঘোষণা করেন বলে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জাকারিয়া হোসেন নয়নের বরাত দিয়ে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। হাসপাতালটিতে আরও অন্তত ১০ জনিআহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের মিডিয়া সেলের উপ-সহকারী পরিচালক শাহজাহান শিকদার।
ভূমিকম্পে রাজধানীর আরও বেশকিছু জায়গায় ভবন হেলে ও ধসে পড়ার দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আরমানিটোলা কসাইটুলিতে ৮ তলা ভবন ধসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে সদরঘাট ও সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশন থেকে ২টি ইউনিট সেখানে যায়। তবে পলেস্তারার কিছু আলগা অংশ ও কিছু ইট খসে পড়লেও ভবনের কোন ক্ষতি হয়নি এবং কোনো হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি।
তবে, খিলগাঁওয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পার্শ্ববর্তী দোতলা একটি ভবনে একটি ইট পড়ে একজন আহত হয়েছেন। স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এদিকে, বারিধারা এফ ব্লকের ৫ নম্বর রোডের একটি বাসাবাড়িতে আগুনের সংবাদ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে বারিধারা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট অগ্নিনির্বাপন করে। তবে অগ্নিকাণ্ডটি ভূমিকম্পের কারণে কি না তা নিশ্চিত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
এ ছাড়া পুরান ঢাকার স্বামীবাগে আটতলা একটি ভবন অন্য একটি ভবনে হেলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভূমিকম্পে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। খবর শুনে স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে সেখানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
কলাবাগানের আবেদখালী রোডের একটি ৭ তলা ভবনও হেলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশন থেকে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনো হতাহতের ঘটনা পায়নি। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ভবনটি ঠিক আছে। লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ফোন করেছিল।
এ ছাড়াও রামপুরা টিভি রোডে কয়েকটা বিল্ডিং একটা অন্যটার ওপর হেলে পড়েছে। উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর রোডের একটি ৬ তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় চার পাশে বড় ফাটল ধরেছে। এদিকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের অংশে ওপর পর্যন্ত বড় ফাটল ধরেছে খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় একটি বাসাবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে গজারিয়া ফায়ার স্টেশন থেকে ২টি ঘটনাস্থলে গিয়েছে।
গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা ও ইটাহাটা এলাকায় কয়েকটি পোশাক কারখানা থেকে হুড়োহুড়ি করে রাস্তায় বের হতে গিয়ে এবং সিঁড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।
