উদ্বোধনের পরদিনই মওলানা ভাসানী সেতুর ৩০০ মিটার বিদ্যুতের তার চুরি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৩৬

ছবি: সংগৃহীত
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধনের এক দিন পরই সেটির ল্যাম্পপোস্টের বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রায় ৩০০ মিটার তার চুরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) গভীর রাতে দুষ্কৃতকারীরা মাটি খুঁড়ে মাটির নিচ দিয়ে স্থাপন করা ওই তার কেটে নিয়ে গেছে। এতে সেতুর ল্যাম্পপোস্টে আলো জ্বলেনি, অন্ধকারে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করেছে।
এ সম্পর্কে আজ শুক্রবার দুপুরে গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘শুক্রবার সকালে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। দুষ্কৃতকারীরা প্রায় ৩০০ মিটার বৈদ্যুতিক তার চুরি করেছে। তাদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সুন্দরগঞ্জ থানায় জানানো হয়েছে। থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রক্রিয়া চলছে।’
উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘আজ বিকাল থেকেই নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু করা হচ্ছে। পাশাপাশি সেতুর নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েনের বিষয়টিও বিবেচনায় আছে।’
স্থানীয় লোকজন জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতেই সেতুর আলো নিভে যায়। অনেকেই ভেবেছিলেন লোডশেডিং হয়েছে। তবে সারা রাত আলো না জ্বালায় শুক্রবার সকালে স্থানীয় লোকজন সেতুর পাশে খোঁড়া গর্ত দেখতে পান এবং পরে এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে জানান। তাঁদের দাবি, দ্রুততম সময়ে ল্যাম্পপোস্টগুলোয় নতুন সংযোগ দিয়ে সেতুটি আবার আলোকিত করা হোক।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেতুর নিরাপত্তায় আজ থেকেই সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শিগগিরই সেখানে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। স্থায়ী ক্যাম্পের জন্যও আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার দুপুরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া সেতুটি উদ্বোধন করেন। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ঘাট থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী ঘাট পর্যন্ত সেতুটি নির্মাণে ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়। সেতুর উভয় পাশে ৮৬ কিলোমিটার সড়ক মেরামত, ছোট-বড় ৬২টি সেতু-কালভার্ট নির্মাণ ও সাড়ে তিন কিলোমিটার নদী শাসন মিলিয়ে মোট ব্যয় হয় ৯২৫ কোটি টাকা। ১ হাজার ৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯ দশমিক ৬০ মিটার প্রস্থের সেতুটি দুই লেনের এবং মোট ৩১টি স্প্যান।
এলজিইডির সূত্রে জানা যায়, সেতুটি চালু হওয়ায় কুড়িগ্রামের চিলমারী থেকে ঢাকার দূরত্ব কমে ৯৩ কিলোমিটার। এতে সময় সাশ্রয় হবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা।