ইসলামী ব্যাংকের সিএসআর প্রধানের সক্রিয় রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৯
অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণে গঠিত টাস্কফোর্স ব্যাংক খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার সুপারিশ করলেও দেশের অন্যতম শীর্ষ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের একাধিক কর্মকর্তা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছেন—এমন তথ্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ব্যাংকটির কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) বিভাগের প্রধান ফরিদুল ইসলাম একইসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার বিষয়টি “কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট” বা স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
এ বছরের ৩১ জানুয়ারি অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণে গঠিত টাস্কফোর্স তাদের ৩১ দফা সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেয়। প্রতিবেদনে দেশের অর্থনীতির স্বার্থে ব্যাংক খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা সরাসরি রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। এমনকি ব্যাংকের কিছু শাখায় রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘটনাও আলোচনায় এসেছে।
গত ১৯ জুন ইসলামী ব্যাংকের কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান ব্যাংকের ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ফরিদুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য এবং খিলগাঁও জোনের পরিচালক হিসেবেও পরিচিত।
জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাঁর সরব উপস্থিতি দলটির ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত দেখা যায়। ফলে একটি বড় বেসরকারি ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তার রাজনৈতিক পদে থাকা “স্বার্থের সংঘাত” বা কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আলোচনা চলছে।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ফরিদুল ইসলাম নিশ্চিত করেন যে, তিনি ইসলামী ব্যাংকে চাকরি করছেন এবং সিএসআর ডিপার্টমেন্টের হেড হিসেবেই কর্মরত রয়েছেন। রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকার বিষয়টিও তিনি নিশ্চিত করেছেন। তবে জনাব ফরিদুল দাবি করেছেন, কর্মদিবসে তিনি চাকরিতেই মনোনিবেশ করেন। প্রয়োজনে সন্ধ্যায় (অফিসের পর) দলীয় কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হন, তবে সাধারণত ছুটির দিনে (শুক্র ও শনিবার) তিনি জামায়াতে ইসলামীর দলীয় কাজে অংশগ্রহণ করে থাকেন। জনাব ফরিদ উল্লেখ করেন এটা রাজনীতি না, তিনি দ্বীনের কাজ করেন।
কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট/স্বার্থের সংঘাত ঘটতে পারে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন - বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের সিএসআর কার্যক্রম বেশ সীমিত, ফান্ড স্বল্পতার কারণে ইসলামী ব্যাংক পূর্বের ন্যয় ব্যাপক সিএসআর কর্মসূচি হতে বিরত রয়েছে, এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে পাশ কাটিয়ে তাঁর একার পক্ষে সিএসআর বিষয়ক কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই। তাই কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট/স্বার্থের সংঘাত ঘটতে পারার সম্ভাবনা নেই।
